গ্রাফাইট এবং চারকোল, এই ২টি বহুল ব্যবহত হয় ড্রয়িং এবং ড্রাফটসম্যানশিপ এ। দুটি কার্বন বেসড মিডিয়ামস হলেও, দুটির মধ্যে চারিত্রিক বৈষম্য রয়েছ। দুই মিডিয়ামস এর মধ্যে কিছু ইউনিক কোয়ালিটিজ, স্ট্রেঙথস এবং উইকনেস বর্তমান। এইটা বলা একটু কঠিন যে কোন মিডিয়ামস টা সঠিক, এই টা নির্ভর করছে আপনি যে চিত্রটি আঁকার পরিকল্পনা করছেন তার ওপর।
এই বহুল ব্যবহত মিডিয়ামস গুলোর মধ্যে চারকোল ব্যবহত হয় অভিব্যক্তিপূর্ণ এবং ছবিতে নাটকীয়তা ফুটিয়ে তোলার যন্যে আর গ্রাফাইট ব্যবহত হয় নিখুঁত এবং রিয়ালিস্টিক চিত্র র যন্যে। বিগত কিছু বছর ধরে, চারকোল এবং গ্রাফাইট এর ওপর বিভিন্ন্য পরীক্ষ্যা-নিরীক্ষা চালিয়ে বেশ কিছু ফর্ম নিয়ে আসা হয়েছে। এতে করে এই দুই মিডিয়ামস এর বিবিধতা এবং প্রয়োগ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই বার দেখা যাক কোন মিডিয়ামস টা আপনার পক্ষ্যে উপযোগী।
চারকোল
এটি একটি কার্বন এর ফর্ম, এটি ভুসো কালো প্রায় ভঙ্গুর মিডিয়ামস যা অভিব্যক্তিপূর্ণ চিত্র তে ব্যবহত হতে দেখা যায়। চারকোল এর রাসায়নিক গঠন জটিল জাল এর মতো যার কোনো উনিফর্মিটি নেই।
চারকোল তৈরী হয় পুরোপুরি প্রাকৃতিকভাবে, গাছ, কাঠ কে বন্ধ প্রকোষ্ঠে ধীরে ধীরে আগুনে পুড়িয়ে। ড্রাই মিডিয়াম হবার দরুন এটা কে স্টিক বা পাউডার হিসাবে ব্যবহার করা যায়, এর সাথে আঠা বা ওয়াক্স বাইন্ডার মিশিয়ে হার্ড মিডিয়াম বানানো হয়। হার্ডনেস হিসাবে চারকোল কে বিভিন্ন্য ভাগে ভাগ করা যায়।
যেমন ডার্ক কালোর যন্যে সফ্ট চারকোল আর সফ্ট / হালকা কালোর যন্যে হার্ড চারকোল ব্যবহার করা হয়।
ভাইন, উইলো এবং লিন্ডেন চারকোল, সচারচর আমরা এই তিন ধরণের চারকোল ব্যবহার করি।
ভাইন এবং উইলো গাছ-কাঠ পুড়িয়ে বানানো হয়। গাছ এর থেকে এইগুলো বানানো হয় বলে এর স্টিক গুলো সোজা হয়না। ভাইন চারকোল সাধারণত ধূসর কালো হয় আর উইলো চারকোল ডার্ক, রিচ, ম্যাট কালো হয়। ভাইন চারকোল সহজেই মুছে ফেলা যায়।
এই যন্যে লাইফ ড্রয়িং এবং যে সব কাজে বারবার কারেকশন করার দরকার পরে সেখানে ব্যবহত হয়। বর্তমানে ভাইন চারকোল কেও সফ্ট , মিডিয়াম আর হার্ড , এই তিনটি রেঞ্জ এ পাওয়া যায়।
লিন্ডেন চারকোল ও কাঠ থেকে তৈরি হয় এবং এর প্রসেস খুবই ধীর গতির, এই চারকোল দিয়ে স্টিক বানানো হয়।
এই সব ছাড়াও চারকোল এর আরও অনেক প্রকার আমরা দেখতে পাই। যেমন পাউডার, কম্প্রেসড, পেন্সিল , সাদা চারকোল , কার্বন পেন্সিল।
চারকোল পাউডার তৈরী হয় ভাইন চারকোল গুঁড়ো করে। অনেকটা জায়গা কালো করতে এটা ব্যবহার হয়, জলরঙের সাথেও এটা ব্যবহার করা যায়। ব্রাশ এর সাহায্যে এটা ব্যবহার করা হয়।
এর ভঙ্গুরতা কম করতে এর সাথে আঠা মিশিয়ে কম্প্রেসড স্টিক বানানো হয়। বাইন্ডার এর পরিমান হিসাবে হার্ড তো সফ্ট ভেরিয়েশন করা হয় (সফ্ট 6b থেকে হার্ড HB )।
চারকোল পেন্সিল তৈরী হয় কম্প্রেসড চারকোল কে কাঠের জ্যাকেট এর মধ্যে ভরে। চারকোল পেন্সিল ব্যবহার করার সুবিধে অনেক। সহজেই শার্পেন করা যায় , নিখুঁত কাজ করতে সুবিধে হয়, আর হার্ডনেস বিচারে 6b থেকে HB বিভিন্ন্য পেন্সিল পাওয়া যায়।
সাদা চারকোল আসলে টাইটেইনিঅ্যাম হোয়াইট পিগমেন্ট বা ক্যালসিয়াম কার্বোনেট এর মিশ্রণ কাঠের জ্যাকেট এর মধ্যে ভরা হয়। পোড়া তেলের ল্যাম্পের কালী কে বাইন্ডার মিশিয়ে এই কার্বন পেন্সিল তৈরী হয়। বাইন্ডার এর পরিমান দিয়ে সফ্ট থেকে হার্ড কার্বন পেন্সিল বানানো হয়।
চারকোল টেক্সচার্ড কাগজ এ ভালো কাজ করে। বড়ো ছবির ক্ষেত্রে চারকোল খুব কাজের। চারকোল সহজেই মুছে ফেলা যায় তাই আলো-আঁধার এর বিভিন্নতা তুলে ধরতে চারকোল এর জুড়ি নেই।
যেহেতু চারকোল সহজেই উঠে আসে তাই কাজ করার সময় একটু সতর্ক থাকা উচিত না হলে হাতের ঘষা লেগে উঠে যেতে পারে বা কাগজ টা নোংরা হতে পারে। তাই কাজ শেষে ফিক্সাটিভ দিয়ে স্প্রে করে নিলে চারকোল ওটার সম্ভবনা কমে যায়।
গ্রাফাইট
এক ধরণের খনিজ কার্বন উপাদান হলো গ্রাফাইট। বিগত ৬০০ বছর ধরে মানুষ পেন্সিল হিসাবে এটা ব্যবহার করে আসছে।
১৭৭৯ সালের আগে ভুল ধারণা বসত এই কার্বন খনিজ কে ” lead ” বলে জানতো, তাই এখনো আমরা পেন্সিল এ ব্যবহত কার্বন কে লেড বলি। তাই এর নাম ও হয়েছে গ্রিক ওয়ার্ড “graphein” থেকে যার মানে “লেখার যন্যে”।
গ্রাফাইট মেটালিক খনিজ কার্বন, যা মাটি আর জল এর সাথে মিশিয়ে উচ্চ তাপমাত্রায় সংশোধন করে মোমের সাথে মিশিয়ে পেন্সিল এ ভরে আমরা ব্যবহার করি। বাইন্ডার এর পরিমান এর ওপর নির্ভর করে এর হার্ডনেস , স্ট্রেংথ এবং হিউ।
অনেক শিল্পী এটাকে স্কেচ বা রিয়ালিস্টিক কাজ করার অপরিধার্য্য বলে মনে করেন। গ্রাফাইট স্ট্রোক কে মুছে বা ঘষে অনেক রকমের ইফেক্ট দেওয়া যায়। এটা সহজ ভঙ্গুর না হবার জন্যে পেন্সিল এর শিস খুব সুচালো করে কাজ করা যায়।
চারকোল এর মতো গ্রাফাইট অনেক ধরণের দেখতে পাই, গ্রাফাইট পেন্সিল, গ্রাফাইট ব্লক বা স্টিক , গ্রাফাইট পাউডার। Nicolas-Jacques Conte ১৭৯৫ সালে বর্তমান এ আমরা যে পেন্সিল ব্যবহার করি তা বানানো শুরু করেন। বিশুদ্ধ গ্রাফাইট, মাটি আর জল মিশিয়ে কাঠের খাপ এ ভরে পেন্সিল বানান।
তার এই পদ্ধতিতে বানানো পেন্সিলের হার্ডনেস নিয়ন্ত্রণ করা যায় মাটির পরিমান দিয়ে। গ্রাফাইট পেন্সিলের হার্ডনেস পরিমাপ করা হয় H থেকে B, সবথেকে শক্ত F বা HB আর সবথেকে নরম 8B। শিল্পী তার ছবির দরকার অনুসারে নিজের নিজের পেন্সিল বেছে নেন।
গ্রাফাইট স্টিক বিশুদ্ধ গ্রাফাইট আর মাটি মিশিয়ে উচ্চ তাপমাত্রায় বানানো হয়। রাজিন মাখিয়ে দেওয়া হয় যাতে ভেঙে বেরিয়ে না পরে। এই পদ্ধতিতে উডলেস পেন্সিলও বানানো হয়। গ্রাফাইট পাউডার সিনথেটিক গ্রাফাইট বানানোর সময় পাওয়া যায়। চারকোল পাউডার এর মতোই একে ব্যবহার করা যায়।
গ্রাফাইট মসৃন কাগজে ভালো ফল দেয়। চটজলদি এবং ছোট কাজের ক্ষেত্রে খুব কাজ দেয়। গ্রাফাইট এর একটি বড়ো সমস্যা হলো এর শাইনিং । বড়ো ছবির ক্ষেত্রে অযাচিত শাইনিং ছবির দৃশ্যমানতা কমিয়ে দেয়।
চারকোল বা গ্রাফাইট দুই মিডিয়ামস এই কিছু সুবিধে কিছু অসুবিধে আছে , আবার দুজনের বিভিন্ন্যতা ও অনেক। দুই মিডিয়ামস এর কাজ করার অনুভুতিও আলাদা।
গ্রাফাইট এ সফ্ট গ্রে টোন অথবা চারকোল এর ডার্ক রিচ কালো, ছবির প্রয়োজনীতা অনুসারে ব্যবহার করলে, দুই মিডিয়াম দিয়েই আপনি করতে পারেন নতুন সৃষ্টি। ‘গ্রাফাইট পেন্সিল এবং চারকোল পেন্সিল এর উপযোগিতা’, ‘গ্রাফাইট এবং চারকোল, এই ২টি বহুল ব্যবহত হয় ড্রয়িং এবং ড্রাফটসম্যানশিপ এ।
দুটি কার্বন বেসড মিডিয়ামস হলেও, দুটির মধ্যে চারিত্রিক বৈষম্য রয়েছ। দুই মিডিয়ামস এর মধ্যে কিছু ইউনিক কোয়ালিটিজ, স্ট্রেঙথস এবং উইকনেস বর্তমান। এইটা বলা একটু কঠিন যে কোন মিডিয়ামস টা সঠিক, এই টা নির্ভর করছে আপনি যে চিত্রটি আঁকার পরিকল্পনা করছেন তার ওপর।
Your article helped me a lot, is there any more related content? Thanks!