কয়েকটি বৈশিষ্ট্য দিয়ে রিয়ালিজম কে ব্যাখ্যা করা যায়, ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি রোজকার জীবন যাত্রা নিখুঁতভাবে আলোকচিত্রের মতো আমাদের সামনে তুলে ধরতে শিল্পীরা এই ধারার সৃষ্টি করেছেন।
শিল্পীরা পূর্ববর্তী রোমান্টিকতা ঝেড়ে ফেলে কঠিন অমসৃণ বিশ্ব কে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। শিল্পীরা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিখুঁত অবিকৃত দৃশ্যপট আমাদের সামনে তুলে ধরেন।
রিয়ালিজম বা রিয়ালিস্টিক আর্ট কি?
এই প্রশ্নটা অনেকের মতো আমারও মনে আসে। মনের জিজ্ঞাসার সঠিক উত্তর জানার জন্যে একটু পড়াশুনো শুরু করলাম, দেখলাম এতো বিপ্লব, এতো আমাদের চারপাশের বাস্তবের প্রতিচ্ছবি। যার শুরু ফ্রেঞ্চ রেভলুশন দিয়ে এবং আজো তার ধারা অবিচল অব্যাহত।
ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি বাণিজ্যিক বিপ্লবের পর এর প্রভাবে পাল্টে যাওয়া সাধারণ পরিশ্রমী মানুষের জীবনশৈলী সমাজের সামনে তুলে ধরতে কিছু শিল্পী প্রথাগত রোমান্টিকতা এর বাইরে এসে চিন্তাভাবনা শুরু করেন ।
তারা অতিরঞ্জিত সংবেদনশীল নাটুকে শিল্পের ধারা ভেঙে বেরিয়ে আসেন। তারা বাস্তবের ছবি তুলে ধরতে শুরু করেন, সে যতই অপ্রীতিকর হোকনা কেন। মানুষের জীবনশৈলী, তাদের দুখঃ কষ্ট আনন্দ নিখুঁতভাবে অবিকৃত ভাবে প্রকাশ করা শুরু করেন।
বাস্তববাদী শিল্পীরা ধনী – গরিব নির্বিশেষে নতুন ধারায় তাদের চিত্রায়ন করতে থাকেন। তারা পূর্ববর্তী সৌন্দর্য্যয়ন বাদ দিয়ে বাস্তবের দূসর রঙে সাধারণ জীবনশৈলী ফুটিয়ে তুললেন। এতে উচ্চ বা ধনবান নাগরিক দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, তারা বুঝতে পারেন এর ফলে সমাজে তাদের ক্ষমতা হ্রাস পাবে।
রিয়ালিজম কে আধুনিক শিল্প বিপ্লবের প্রথিকৃৎ ধরা হয়, রিয়ালিজম বিপ্লব আধুনিক জীবন আর শিল্পের মধ্যে মিলন ঘটিয়েছে। পূর্বতন সংবেদনশীল বা বীরগাঁথা এর বাইরে বেরিয়ে মানুষের সম্পর্ক এবং আবেগ নিয়ে কাজ করা শুরু হয়েছে।
গুস্তাভ কোরবেট ছাড়াও আরো অনেকে এই আঙ্গিকে শিল্প সৃষ্টি শুরু করেন, যেমন Jean-François Millet, Honoré Daumier, and Jean-Baptiste-Camille Corot.
রিয়ালিজম কি?
কয়েকটি বৈশিষ্ট্য দিয়ে রিয়ালিজম কে ব্যাখ্যা করা যায়, ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি রোজকার জীবন যাত্রা নিখুঁতভাবে আলোকচিত্রের মতো আমাদের সামনে তুলে ধরতে শিল্পীরা এই ধারার সৃষ্টি করেছেন।
শিল্পীরা পূর্ববর্তী রোমান্টিকতা ঝেড়ে ফেলে কঠিন অমসৃণ বিশ্ব কে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। শিল্পীরা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিখুঁত অবিকৃত দৃশ্যপট আমাদের সামনে তুলে ধরেন।
এই ধারার সৃষ্টির পিছনে বাণিজ্যিক বিপ্লবের অবদান অনেক, বাণিজ্যিক বিপ্লবের প্রভাবে সাধারণ মানুষের সামাজিক জীবন প্রবর্তিত হয়। আর এই পরিবর্তন শিল্পীদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব পরে যার ফল স্বরূপ আমরা দেখতে কাফে, স্ট্রিট, লেবার, মানুষের দেহ এবং শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে নানা সৃষ্টি।
রিয়ালিজম এর সমসাময়িক নেচারলিজম এবং ইম্প্রেশনিজম ধারার চিত্র আমরা দেখতে পাই।
নেচারলিজম এবং ইম্প্রেশনিজম
নেচারলিজম ও প্রবর্তিত হয় ঊনবিংশ শতাব্দীতে, রিয়ালিজম এর মতোই চোখের সামনে যা দেখতে পাওয়া যাই তাই নিখুঁতভাবে তুলে ধরা। সঠিক আলো – ছায়া ছবিতে ফুটিয়ে তুলতেন নেচারলিজমবাদীরা।
পরিস্থিতির ব্যাখ্যা বা আদর্শবাদী চিন্তা ধারা ফুটিয়ে তোলার বদলে সঠিক যা ঘটছে তা নিখুঁতভাবে তুলে ধরতেন। নেচারলিজমবাদীরা ডারউইন এর ধারণা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিশ্বাস করতেন প্রকৃতি সর্বশক্তিমান। তাই তাদের শিল্পের মধ্যে প্রকৃতি প্রাধান্য পেত, মানুষ ছিল প্রকৃতির একটি অংশ।
তারা মানতেন না যে আধুনিক বিজ্ঞান অনেকক্ষেত্রে প্রকৃতি কে ছাড়িয়ে যেতে পারে। নেচারলিজম চিত্র ধারার একটা বড়ো অংশ প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী সম্বলিত।
ব্যাবসায়িক বিপ্লবের পর শহুরে জীবনযাপনের ছবিও প্রাধান্য পায়। নেচারলিজম ধারার চিত্রগুলি সঠিক আলো – ছায়া ও নিখুঁত চিত্রণের জন্যে, আলোকচিত্র বলে মনে হয়।
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে কিছু শিল্পী ঘরে বসে কাল্পনিক চিত্র সৃষ্টি না করে প্রকৃতির মাঝে বসে চোখে দেখে ছবি আঁকা শুরু করেন। তারা সাধারণত ল্যান্ডস্কেপ চিত্রায়ন করতেন এবং সেই মুহূর্তটা কে ধরে রাখার চেষ্টা করতেন নিখুঁতভাবে।
পিয়ের-আগস্টে রেনের অবশ্য এই স্টাইল-এ শহুরে জীবনের ছবি তুলে ধরেছিলেন। তিনি ইম্প্রেশনিস্টদের চিন্তাভাবনার সীমাবদ্ধতা দূর করার ওপর জোর দিতেন।
এই ধারার পথপ্রদর্শক ছিলেন ক্লদ মনেট এবং কিছু সংখ্যক ফ্রান্স ও ব্রিটেনএর শিল্পী, যেমন জন কনস্টবল। প্রকৃতির মাঝে বসে তাৎক্ষণিক পরিবেশ কে চিত্রিত করতে গিয়ে চটজলদি তুলির ঘনঘন ছোট টানএ প্রকৃতির ক্ষণস্থায়ী আলো – ছায়া ছবিতে ফুটিয়ে তুলতেন।
এই নতুন ধারার শিল্পের মধ্যে মিল কোথায়
এই সকল আন্দোলন এর একটাই লক্ষ্য, জীবন কে দেখা, বাস্তবে জীবন যেরকম। ঊনবিংশ শতাব্দীতে শুরু হওয়া এই ধারা গুলো পূর্বতন রোমান্টিকতা, নাটকীয়তা এবং অবাস্তব কাল্পনিক চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে বাস্তব কে সামনে থেকে দেখে তাদের ছবিতে মেলে ধরেছেন।
এই সকল আন্দোলনের মধ্যে আমরা অনেক মিল খুঁজে পাই, প্রকৃতির নিখুঁত বর্ণনা, বাস্তবে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন, কল্পনা বহির্ভূত চোখে দেখা বিষয়ের ওপর চিত্র অঙ্কন।
এদের মধ্যে প্রধান পার্থক্য
এই তিনটি ধারা এতটাই পরস্পর সামঞ্জস্যপূর্ণ যে এদের পার্থক্য বের করা খুব কঠিন।
রিয়ালিজম এবং নেচারলিজম এর বৈশিষ্টগুলি খুবই কাছাকাছি। অনেকে মনে করেন নেচারলিজম হলো রিয়ালিজম এর একটা অংশ।
প্রাকৃতিক পরিস্থিতিতে বিষয় কে তুলে ধরে নেচারলিজম কিন্তু রিয়ালিজম বিষয় কে প্রাধান্য দেয়। নেচারলিজম-এ কখনো কখনো সংবেদনশীল বিষয় দেখা যাই।
রিয়ালিজম এ কঠিন বাস্তবের চিত্রই দেখা যায়।
আর ইম্প্রেশনিজম, বাকি দুটি ধারা থেকে অনেকবেশি রঙিন হয়। ছোট ছোট তুলির টান এ আলো ও তার প্রভাবে রঙের যে পরিবর্তন তা স্বতন্ত্র অনুভূতির সৃষ্টি করে।
রিয়েল-টাইমএ যেভাবে ইমপ্রেশনবাদীরা কাজ করেছিলেন, তা ইমপ্রেশনবাদকে আলাদা করে দেয়।
আধুনিক রিয়ালিজম
ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাস্তবতা একটি শিল্প শব্দ হিসাবে একটি বিশেষ অর্থ ছিল, যেহেতু আধুনিক শিল্প, বাস্তববাদ বা বাস্তববাদী বা বাস্তববাদীর মধ্যে বিমূর্ত দৃষ্টিভঙ্গির উত্থান মূলত চিত্রাঙ্কন বা ভাস্কর্যের একটি নতুন শৈলীর প্রতিনিধিত্ব করে চলেছে।
আধুনিকতম বাস্তববাদী শিল্পের বেশিরভাগের মধ্যে এখনও বিষয়বস্তুর প্রাধন্য রয়েছে যা উনিশ শতকের বাস্তবতার অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য ছিল।
বিংশ শতাব্দীতে, 1920 এর দশকে বাস্তবতাবাদ একটি উত্থান দেখেছিল যখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ধাক্কা একটি প্রতিক্রিয়া এনেছিল, যা যুদ্ধ-পূর্ববর্তী সময়ের অর্ডারে ফিরে আসা নামে পরিচিত।
জার্মানিতে এর ফলে নিউ সাচলিচকিট আন্দোলন (অটো ডিক্স, ক্রিশ্চিয়ান স্ক্যাড) এবং যাদু বাস্তববাদ ঘটেছিল। ফ্রান্সে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ব্রিটেনে বাস্তববাদীরা আঞ্চলিকতার ঘটনা ও অন্যায় বিষয়গুলি আঁকার জন্য মূলত আধুনিক শৈলী ব্যবহার করেছিলন যা বাস্তববাদ ও বিমূর্ত দৃষ্টিভঙ্গির মিলিত ধারা ।
বিংশ শতাব্দীর কিছু রিয়ালিজম মুভমেন্ট
বিংশ শতাব্দীতে ভয়াবহ বিশ্বযুদ্ধ এবং পারমাণবিক অস্ত্রের প্রয়োগ ও তার ফলাফল বাস্তববাদী শিল্পীদের বিষয়ের অভাব হতে দেয়নি। এরফলে বাস্তববাদের বিভিন্ন্য শৈলী আমরা দেখতে পাই।
কিছু উল্লেখযোগ্য চিত্র শৈলীর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো।
ভেরিজো / Verismo (1890s/1900s)
এই ইতালিয়ান শব্দটি কোনও ব্যাখ্যা ছাড়াই চরম রূঢ় বাস্তববাদকে বোঝায়। শব্দটি প্রথম ম্যাসাগনির হিংসাত্মক মেলোড্রাম্যাটিক অপেরাতে প্রকাশিত হয়েছিল, যেমন ক্যাভালেরিয়া রুস্টিকানা (১৮৯০), এবং এটি টেলিমাকো সিগনোরিনি (1835-1901) এর মতো ইতালিয়ান শিল্পীরা গ্রহণ করেছিলেন।
প্রেসিশনিজম / Precisionism (1920s)
একটি আমেরিকান চিত্রাঙ্কন আন্দোলন যা প্রায়শই কিউবিস্ট / ফিউচারিস্ট পদ্ধতিতে নগর / শিল্প ভূদৃশ্যকে চিত্রিত করে, এর সদস্যরা \”কিউবিস্ট-রিয়েলালিস্ট\”, \”ইমামকুলেটস\”, \”স্টেরিলিস্ট\” বা \”আধুনিক ক্লাসিস্ট\” এর মতো বিভিন্ন নাম দ্বারা পরিচিত ছিলেন। শৈলীটি \”তীক্ষ্ণ-ফোকাস বাস্তববাদ\” হিসাবেও পরিচিত ছিল।
প্রিসিনিজমের সবচেয়ে সুপরিচিত প্রকাশকরা হলেন চার্লস শিলার (1883-1965), চার্লস ডেমুথ (1883-1935), এবং জর্জিয়া ওকিফ (1887-1986)।
সোশ্যাল রিয়ালিজম / Social Realism (1920s/1930s)
সোশ্যাল রিয়েলালিস্ট শব্দটি হতাশার যুগে আমেরিকান শহর গুলোর উপর কাজ করা শিল্পীদের বর্ণনা করে। সামাজিক বাস্তবতাবাদ বাস্তবতার একটি প্রাকৃতিকবাদী শৈলী যা এককভাবে সামাজিক সমস্যা এবং নিত্যদিনের সমস্যায় ফোকাস করে।
সোশ্যাল রিয়েলিজম শৈলীর সেরাদের মধ্যে বেন শাহন (1898-1969), জ্যাক লেভাইন এবং জ্যাকব লরেন্স অন্তর্ভুক্ত রয়েছে
সোসালিষ্ট রিয়ালিজম / Socialist Realism (c.1925-35)
সোভিয়েত রাশিয়ায় জোরপূর্বক শিল্পায়নের সময়কালে জোসেফ স্টালিন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একধরণের জন প্রচার প্রচার শিল্প, যা 1920 এর দশকের শেষদিকে শুরু হয়েছিল।
শিল্পের এক স্মরণীয় বীরত্বপূর্ণ স্টাইল, সমাজতান্ত্রিক বাস্তববাদ নতুন সোভিয়েত মানুষ এবং কর্মীকে বিশাল মুরালগুলিতে, পোস্টারগুলিতে এবং জনসাধারণের শিল্পের অন্যান্য রূপগুলিতে মহিমান্বিত করেছিল, সাহসী রেড এবং কৃষ্ণাঙ্গ এবং উত্তেজক চিত্র ব্যবহার করে।
এই আন্দোলনের শৈল্পিক ফ্রন্ট হিসাবে ম্যাক্সিম গোর্কি রাশিয়ায় ফিরে এসেছিলেন। বলা বাহুল্য, এই প্রচারক শিল্পটি রাস্তায় এবং কারখানাগুলিতে বাস্তবের সাথে সামান্য মিল দেখায়।
কমিউনিস্ট প্রলেতারীয় শৈলীর ধারাবাহিকতায় সমাজতান্ত্রিক বাস্তববাদই প্রথম ছিল, যা শেষ পর্যন্ত সোভিয়েত আর্ট সুপ্রিমো আন্দ্রেই জ্যাদানোভএর নিয়ন্ত্রণে আসে।
সমাজতান্ত্রিক বাস্তববাদ রেনাটো গুট্টুসো (যেমনঃ সালফার মাইনারস, 1949) এবং আন্দ্রে ফুগারন (শহীদ স্পেন, 1937) এর মতো শিল্পীরা গ্রহণ করেছিলেন স্পেন এবং ফ্রান্সে।
সুররিলিজম / Surrealism (1920s/1930s)
আন্ড্রে ব্রেটেনের ইশতেহার প্রকাশের পরে ১৯২৪ সালে প্যারিসে একটি অদ্ভুত শিল্প-রূপ, পরাবাস্তববাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সিগমন্ড ফ্রয়েডের মনস্তাত্ত্বিক ধারণার উপর ভিত্তি করে, পরাবাস্তবতা অজ্ঞান মনের সৃজনশীল সম্ভাবনা প্রকাশ করার চেষ্টা করেছিল।
দুটি বিস্তৃত ধরণের পরাবাস্তববাদী শিল্পের উত্থান। সালভাদোর ডালি (1904-89), রেনি ম্যাগ্রিট (1898-1967) এর কল্পনার মতো চিত্রগুলি এবং জোয়ান মিরোর (1893-1983) এর স্বয়ংক্রিয়তা।
উদ্ভট শৈলী এবং অপেক্ষাকৃত স্বল্প সময়ের মধ্যেও, পরাবাস্তববাদ প্রভাব হিসাবে প্রচুর পরিমাণে স্থিতিস্থাপক হিসাবে প্রমাণিত হয়েছিল এবং আজও অব্যাহত রয়েছে।
বিখ্যাত পরাবাস্তববাদী পেইন্টিংগুলিতে ডালির পার্সিস্টেন অব মেমোরি (1931) এবং ডিসিএনগ্রেশন অব পার্সিস্টেন অব মেমরি (1954) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ম্যাজিক রিয়ালিজম / Magic Realism
পরাবাস্তববাদের সমান্তরাল শিল্প আন্দোলনটি ছিল ম্যাজিক রিয়েলিজম, যার চিত্রগুলি দৈনন্দিন বাস্তবতায় নোঙ্গর করা হয়, তবে কল্পনার চেয়েও বেশি। এই নামটি জার্মান শিল্প ইতিহাসবিদ ও সমালোচক ফ্রান্জ রোহ 1925 সালে নাচ এক্সপ্রেশনবাদ: ম্যাগিশার রিয়েলিজাস নামে একটি বইয়ে তৈরি করেছিলেন।
ম্যাজিক রিয়েলিজম রিটার্ন টু অর্ডারটির অংশ ছিল – প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে উদ্ভূত অভিজাত শিল্পের বিরুদ্ধে একটি প্রতিক্রিয়া।
এর সদস্যদের মধ্যে (ইতালি) জর্জিও ডি চিরিকো (যেমন, পেইন্টারের পরিবার, 1926) এবং আলবার্তো সাভিনিও, এবং (জার্মানিতে) আলেকজান্ডার কানোল্ট এবং অ্যাডল্ফ জিগেলার। জার্মানিতে, ম্যাজিক রিয়েলিজম ডাই নিউ শ্যাচলিচিট (নতুন উদ্দেশ্য) আন্দোলনের সাথে ওভারল্যাপ হয়।
হলোকাস্ট আর্ট / Holocaust Art
হলোকাস্ট আর্ট তিন ধরণের। নাৎসি প্রচারের চিত্রগুলি তাদের গণহত্যা কার্যক্রমকে নিম্নরূপে ব্যবহৃত হত; ক্ষতিগ্রস্থদের দ্বারা নির্মিত চিত্রগুলি (প্রায় সমস্ত অঙ্কন) যা পৃথক অভিজ্ঞতা রেকর্ড করে; এবং শোয়ের যুদ্ধোত্তর স্মৃতিচিহ্ন (বেশিরভাগ ভাস্কর্য)
আমেরিকান সমসাময়িক বাস্তববাদ / American Contemporary Realism (1960/1970 এর দশকের গোড়ার দিকে)
এই শব্দটি বিমূর্ত যুগে শিল্পীদের দ্বারা উপস্থাপনের জন্য তুলনামূলকভাবে সহজ-সরল বাস্তববাদী পদ্ধতির বর্ণনা দেয়। শিল্পের আধুনিক বিমূর্ত ধারণাগুলি সম্পর্কে ভালভাবে সচেতন, সমকালীন বাস্তববাদীরা তবুও আরও বেশি .তিহ্যগত পদ্ধতিতে আঁকা বা ভাস্কর্য পছন্দ করেন।
চারুকলার এই পদ্ধতির সাথে যুক্ত বিখ্যাত চিত্রশিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন উইলিয়াম বেইলি, নীল ওয়েলাইভার এবং ফিলিপ পার্লস্টাইন। সমসাময়িক বাস্তবতাবাদ পরবর্তীকালের কিছুটা অতিরঞ্জিত ও হাস্যকর সুরের কারণে ফটোরিয়ালিজমের চেয়ে পৃথক।
ফটোরিয়ালিজম / Photorealism
ফোটোরিয়ালিজম এমন একটি আন্দোলন যা ১৯৬০ এর দশকের শেষভাগে শুরু হয়েছিল, যেখানে দৃশ্যের সাথে ফটোগ্রাফগুলির সাদৃশ্যযুক্ত একটি স্টাইলে আঁকা হয়। বিষয়টি প্রায়শই গতানুগতিক এবং তুচ্ছ হয়; একজন ফটোরিলিস্ট কাজের প্রকৃত বিষয় হ\’ল চিত্রের অভ্যন্তরীণ উপস্থাপনা তৈরি করা যা আমরা যেভাবে ছবিগুলি এবং চিত্রগুলি দেখি ।
ফোটোরিয়ালিস্ট আন্দোলনের শীর্ষস্থানীয় সদস্য হলেন রিচার্ড এস্টেস এবং চক ক্লোজ। এস্টেস উইন্ডো গ্লাসে বৃস্তিত প্রতিচ্ছবি সহ রাস্তার দৃশ্যে বিশেষজ্ঞ ছিলেন এবং ক্লোজ সাধারণত অভিব্যক্তিহীন মুখগুলির বিশাল প্রতিকৃতি করতেন। অন্যান্য ফোটোরিয়ালিস্টরা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হন: ঘোড়া, ট্রাক, ডিনার ইত্যাদি।
হাইপাররিয়ালিজম / Hyperrealism
হাইপাররিয়ালিজম এমন একটি সাধারণ শব্দ যা 1970 এর দশকের গোড়ার দিকে উদ্ভূত বাস্তববাদী চিত্রকলা এবং ভাস্কর্যের চরম রূপকে বর্ণনা করে। এটিকে সুপার-রিয়েলিজম হিসাবেও চিহ্নিত করা হয় এবং চিত্রকলায় ফটো-রিয়েলিজমের সমার্থক শব্দ।
ভাস্কর্যের বিখ্যাত ফোটোরিয়ালিস্ট শিল্পীদের মধ্যে ডুয়ান হ্যানসন (1925-96), জন ডি আন্দ্রেয়া এবং ক্যারল ফিউম্যান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। রন মুইকে এবং রবার্ট গবারের সাম্প্রতিক কিছু কাজকে হাইপার-রিয়েলালিস্ট হিসাবেও বিবেচনা করা যেতে পারে।
উল্লেখযোগ্য চিত্রশিল্পীদের মধ্যে চাক ক্লোজ, রবার্ট বেচল্ট, রিচার্ড এস্টেস, অড্রে ফ্ল্যাক, র্যাল্ফ গোয়িংস অন্তর্ভুক্ত।
ছদ্মবেশী বাস্তববাদ / Cynical Realism (চীন) (1990)
চিনাবাদী বাস্তবতা, চিনা সমসাময়িক চিত্রকলার একটি ব্যঙ্গাত্মক স্টাইল যা ১৯৯০ এর দশকে তিয়ানানমেন স্কয়ার বিক্ষোভ দমন করার পরে প্রকাশিত হয়েছিল। চূড়ান্ত বাস্তববাদীরা পরাবাস্তববাদ ও প্রতীকবাদের পাশাপাশি ধ্রুপদী চিত্র, চিত্রকর্ম সহ বিভিন্ন ঐতিহ্য থেকে চিত্র ধার করেছিলেন।
এর মধ্যে রয়েছে কমিউনিজমের আবির্ভাব থেকে আজকের শিল্পায়ন ও আধুনিকীকরণ পর্যন্ত চীনা সমাজ যে রূপান্তরটি পেরিয়ে আসছে তার একটি বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি এবং ব্যাখ্যা-উত্তর-উপহাসের পরেও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
রিয়ালিজম সমন্ধে জানার পর, আমাদের কাছে পরিষ্কার এই বিপ্লব আধুনিক সমস্ত ধারার প্রথিকৃৎ। প্রকৃতিবাদ, বাস্তববাদ এবং ইম্প্রেশনিজম, বাস্তব শিল্প জগতের একটি মুখ্য কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। আধুনিক যুগে রিয়ালিজম নিয়ে কাজ করা শিল্পীর সংখ্যা বেড়েছে। রিয়ালিজম নিয়ে বিভিন্ন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা আজ ও অব্যাহত।